মিশ্র সবজি চাষে সফল নাটোরের ইলিয়াস

নিজস্ব প্রতিবেদক:
মাচায় নাইসগ্রীন জাতের লাউ চাষ আর মাচার নিচে মিশ্র পদ্ধতিতে মুলা, বেগুন, পুঁইশাকহ বিভিন্ন রকমের নিরাপদ সবজি চাষ করে সফলতা পেয়েছে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মির্জাপুর দিয়ার গ্রামের কৃষক মোঃ ইলিয়াস শেখ।

জানা গেছে, কয়েক মাস আগে ১২ কাঠা জমিতে মিশ্র পদ্ধতিতে এক সঙ্গে নাইসগ্রীন জাতের লাউয়ের চারা রোপন রোপন করেন। মাচার নিচে মুলা, বেগুন পুইশাক রোপন করেন। পোকামাকড় থেকে ফসল রক্ষায় এবং কীটনাশকবিহীন ফসল উৎপাদনে জৈব বালাইনাশক ফাঁদসহ ১৪ থেকে ১৫টি আঠালো ফাঁদ, ৬টি ফেরোমিন ফাঁদ তৈরী করে চাষাবাদকৃত এসব ফসলের নিবির পরিচর্যা করে করেন। এস মিশ্র সবজি চাষে তার খরচ প্রায় ১৫ হাজার টাকা। আর এ পর্যন্ত তিনি ৪৫ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছেন। এরমধ্যে ১২০০ পিচ লাউ ৩৬ হাজার টাকা, মুলা ৬ হাজার টাকা এবং পুঁইশাক ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। এর আগে তিনি গ্রীষ্মকালী পেঁয়াজ ও মাচায় কালো জাতের তরমুজ চাষ করে ব্যাপক সফলতা পান।

এছাড়াও তিনি নার্সারী, পলিনেট হাউজ পদ্ধতিতে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক বিহীন সবজির চারা উৎপাদন, বিপনন ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার চারা বিক্রি করে থাকেন। কৃষি কাজ করে মাসে লাখ টাকা আয় করেছেন এ কৃষক।

কৃষক মোঃ ইলিয়াস শেখ জানান,
পড়ালেখা করে চাকুরীর আশা না করে কৃষিকেই পেশা বেছে নিয়েছি। ১২কাঠা জমিতে মিশ্র পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরু করেন। তিন মাসে ৩৬ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। এখন তিন মাস পর্যন্ত লাউয়ের ফলন আসবে। লাউয়ের জমিতে তিনি শীতকালীন সবজি টমেটোর চারা রোপন করেছেন। ফলে এবার লাউয়ের সাথে শীতকালিন টমেটোও বিক্রি করতে পারবেন তিনি। সবমিলিয়ে মিশ্র পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে কৃষকরা সব সময় লাভবান হবেন।

তিনি আরও জানান,একই জমিতে এক সঙ্গে একাধিক ফসল ফলানো সম্ভব, পাশাপাশি খরচও একই। কারণ আলাদা করে কৃষককে কোনো উৎপাদন খরচ করতে হয় না। ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচসহ পরিবারের যাবতীয় খরচ এখান থেকেই মিটছে তার।

বিপ্রবেলঘড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান আলী ঢাকা মেইলকে বলেন, ইলিয়াস শেখ একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা এবং কৃষক। তার সফলতা দেখে অনেকেই কৃষি কাজে এগিয়ে আসছেন। স্বল্প জমি ব্যবহার আর নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে সফলতা অর্জন করেছেন তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। নতুন নতুন অনেকে মিশ্র সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার ফৌজিয়া ফেরদৌস ঢাকা মেইলকে বলেন, কৃষি উদ্যোক্তা ইলিয়াস হক একজন সফল ব্যক্তি। তার দিয়ে গ্রীষ্মকালী পেঁয়াজ চাষ করিয়েছিলাম তিনি সফল হয়েছিলেন। তিনি কিন্তু মাচায় কালো জাতের তরমুচ চাষ করেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তিনি বর্তমানে মিশ্র পদ্ধতিতে সব ধরনের ফসল চাষাবাদ করছেন। হাইব্রিট জাতের লাউ মাচায় চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। নিচে শীতকালীন বিভিন্ন সবজি চাষ শুরু করেছেন। এতে কম জমিতে বেশি বিভিন্ন মিশ্র সবজি ফলানো সম্ভব। যেহুত্ব আমাদের জমিরর পরিমান কম। এতে সবজি চাহিদা পূরণ হবে। এ পদ্ধতিতে নলডাঙ্গা উপজেলায় অন্তত ১২০০ থেকে ১৩০০ জন কৃষক মিশ্র পদ্ধতিতে সবজি চাষাবাদ করছেন। চলতি মৌসুমে নলডাঙ্গা উপজেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে নাইসগ্রীন জাতসহ বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের লাউ চাষ হয়েছে। যার গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ২৮ থেকে ৩০ মেট্রিক টন।