নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে বস্তা ছিদ্র করে সার চুরি, প্রতারিত আখচাষিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের লালপুরে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের সার গুদামে শ্রমিকরা বস্তা ছিদ্র করে নিয়মিত সার চুরি করছে। আনলোডের সময় হুক দিয়ে প্রতিটি বস্তা ছিদ্র করে ৩-৪ কেজি করে সার চুরি করা হয়। পরে সেই ওজনে কম থাকা সারই ঋণের মাধ্যমে আখচাষিদের বিতরণ করা হচ্ছে। এতে কৃষকরা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন, অথচ এ বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৪২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে শ্রমিকদের বস্তা ছিদ্র করে সার চুরি করতে দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয় প্রতিবছর আখ উৎপাদনের জন্য নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের আওতাধীন চাষিদের ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি সার বরাদ্দ দেয়। এবছর ৫ হাজার ৭০০ আখচাষির জন্য ৫ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন সার বরাদ্দ হয়েছে। সম্প্রতি ঈশ্বরদী সার গুদাম থেকে ট্রলিতে করে মিলের গুদামে সার আনা হয়, তখনই শ্রমিকরা কৌশলে বস্তা ছিদ্র করে সার চুরি করে নেয়।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, তারা সুগার মিল থেকে ঋণের মাধ্যমে সার সংগ্রহ করেন এবং আখ সরবরাহের মাধ্যমে সেই ঋণ পরিশোধ করেন। কিন্তু প্রতি ৫০ কেজির বস্তায় প্রায় ৪-৫ কেজি করে কম থাকায় তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হন। কৃষকরা জানান, প্রতিবছর একই ঘটনা ঘটে, কিন্তু এর সমাধান হয় না। তারা অভিযোগ করলেও কোনো লাভ হয় না, কারণ মিলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেছেন তারা।
বৈদ্যনাথপুর গ্রামের কৃষক হানিফ আলী ও দক্ষিণ লালপুর গ্রামের খলিলুর রহমান বলেন, প্রতিবছরই বস্তায় ওজন কম থাকে। বিষয়টি জানালে কর্তৃপক্ষ জানায়, হুক লাগার কারণে ওজন কিছুটা কম হয়। কিন্তু আমরা চাই, সঠিক ওজনে সার বিতরণ করা হোক, যাতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত না হই।
এ বিষয়ে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফরিদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে ডাকা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কৃষকদের দাবি, শুধু আশ্বাস দিলেই হবে না, এই দুর্নীতির স্থায়ী সমাধান করতে হবে, যাতে তারা ন্যায্য পরিমাণ সার পেতে পারেন এবং আখ উৎপাদনে কোনো অসুবিধা না হয়।