নাটোরে ২ হাজার কোটি টাকার পশু বেচাকেনার আশা

নাটোর প্রতিনিধি
কোরবানিকে সামনে রেখে নাটোর জেলায় ৫ লাখ ১৪ হাজার ২১৫ টি পশু প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। শেষ সময়ে পশু যত্নে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। ইতিমধ্যে নাটোরের বিভিন্ন হাটে ও খামারে পশু বিক্রি শুরু হয়েছে। এ বছর জেলায় প্রায় আনুমানিক ২ হাজার কোটি টাকার পশু কেনাবেচা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ।

জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে নাটোর জেলায় ১৯ হাজার ৭৪৪ টি খামারে ৫ লাখেরর অধিক পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যার মধ্য নাটোর সদর উপজেলায় ২ হাজার ৩২৮ টি খামারে ৮৯ হাজার ২৩০টি পশু, বাগাতিপাড়া উপজেলায় ৩ হাজার ৪৮৮ টি খামারে ২৯ হাজার ৩৯৪ টি, গুরুদাসপুর উপজেলায় ২ হাজার ৭২৫ টি খামারে ৯৭ হাজার ৮৯৪ টি, সিংড়া উপজেলায় ৩ হাজার ২৮২টি খামারে ৯৭ হাজার ২৬৭ টি, বড়াইগ্রাম উপজেলায় ২ হাজার ৯৬৭টি খামারে ৬৬ হাজার ২৯টি, লালুপর উপজেলায় ৩ হাজার ৭৬২টি খামারে ৭৬ হাজার ১৭৬টি এবং নলডাঙ্গা উপজেলায় ১ হাজার ১৯২টি খামারে ৫৮ হাজার ২২৫ টি পশু রয়েছে। এর মধ্য ষাড় গরু রয়েছে ৮৬ হাজার ৬৮৬ টি, গাভী গরু ১৬ হাজার ৮২৩টি, বলদ গরু ১৪ হাজার ৮০৮টি, মহিষ ৭ হাজার ৯২৮টি, ছাগল ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৭ টি, ভেড়া ৩৮ হাজার ৪৫১টিসহ আরও ৩২টি অন্যান্য পশু রয়েছে। জেলায় এ বছর প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার ২০৫ কোরবানির পশু জবাই করা হবে বলে তথ্যে জানানো হয়হ। এবং উদ্বৃত্ত প্রায় ২ লাখ ৪১ হাজার ১০টি পশু ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার হাটে বিক্রি করা হবে।

এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় দু’টি অনলাইন প্লাটফর্ম ‘নাটোর পশুর হাট’ ও ‘অনলাইন ডিজিটাল পশুর হাট’ থেকে কোরবানির পশু কেনাবেচা করা হবে। এছাড়া জেলার ৭ উপজেলার প্রাণী সম্পদ অফিস, ব্যক্তি উদ্যোগে এবং খামারসহ প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি অনলাইন ফেসবুক প্লাটফর্মে কোরবানির পশু কেনাবেচা কাজ শুরু হয়েছে।

শহরের তেবাড়িয়া এলাকার খামারি মোহর আলী বলেন, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বিক্রির জন্য খামারে ৮টি ষাড় গরু প্রস্তুত করেছি। আমার খামারে শুধু খৈল, গম, ভূষি, ছোলা এবং সবুজ ঘাস খাইয়ে খুব সহজেই পশু মোটাতাজা করেছি। যদি বাজার ভালো থাকে তাহলে প্রতি গরু দুই থেকে আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবো।

খামারে পশু কিনতে আসা শফিকুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, আমি প্রতি বছর খামার থেকে গরু ক্রয় করি। খামার থেকে গরু কিনলে সুবিধা রয়েছে, ঈদ পর্যন্ত গরু খামারে রাখা যায়। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার বাড়তি ঝামেলা পোহাড়ে হয় না। তবে এ বছর গরুর দামটা বেশি মনে হচ্ছে।

হাটে গরু কিনতে আসা রাফি রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, কোরবানির জন্য মাঝারি গরু খুঁজছি। ৫ জনের ভাগে কোরবানি করবো তবে গরু দামটা এবার একটু বেশি মনে হচ্ছে।

নাটোর জেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা
ড. জুলফিকার মোঃ আখতার হোসেন বলেন, এ বছর জেলায় প্রায় ৫ লাখ ১৪ হাজার ২১৫ টি কোরবানির পশু প্রস্তত রয়েছে। যার বাজার মূল্য আনুমানিক প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা মতো। নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পশু উৎপাদনে খামারীদেরকে প্রাণী সম্পদ বিভাগ থেকে নিয়মিত পরামর্শসহ বিভিন্ন সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে।