রাতেও বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়ক ফাঁকা, স্বস্তিতে ফিরছে উত্তরের মানুষ

নিউজ ডেস্ক:
রজায় কড়া নাড়ছে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে অনেকেই আগেভাবেই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ কাটাতে নাড়ীর টানে গ্রামের বাড়িতে ফিরছে মানুষ। দিন-রাত বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়ক ফাঁকা থাকায় এবারে স্বস্তির ঈদযাত্রা উপভোগ করছে উত্তর-দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ।ফলে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের যাত্রীবাহী পরিবহণের সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

রবিবার (৭ এপ্রিল) বিকেল থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের মুলিবাড়ি, কড্ডার মোড়, নলকা, পাচিলা, হাটিকুমরুল ও চান্দাইকোনা বাজার এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসহ বিভিন্ন পরিবহণের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। মহাসড়কে গাড়ির চাপ বাড়লেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসের তুলনায় ব্যক্তিগত যানবাহন রয়েছে বেশি। এছাড়া রাত-দিনে মহাসড়ক ফাঁকা পেয়ে অনেকেই খোলা ট্রাকে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে ব্যস্ততম শহরের মানুষেরা।

জানা যায়, স্বাভাবিক দিনে এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন ২০-২৫ হাজার যানবাহন চলাচল করলেও ঈদযাত্রায় ৩৫-৪০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। তবে এবার উত্তরের ঘরে ফেরা মানুষের যাতায়াত যেন বিঘ্ন না ঘটে, এজন্য হাটিকুমরুল মোড় কংক্রিটের রাস্তা মেরামত, পাঁচিলা ওভারপাস, মুলিবাড়ি ওভারপাস, দাদপুর ওভারপাস এবং দাতিয়া সেতু খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে ওভারপাস এবং সেতুর ওপর দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করেছে।

গাজীপুর থেকে পাবনাগামী পরিবহনের যাত্রী শাহিন শেখ জানান, বিগত বছরে ঈদের ছুটির বেশির ভাগ সময় কাটতো গাড়ীতে। এবার এচিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে চলছে। এভাবে যানবাহন চললে যাত্রীদের কোন দুর্ভোগ প্রহাতে হবে না। যথা সময়েই বাড়িতে পৌছে যাবে ব্যস্ততম শহরের মানুষেরা।

ঢাকা থেকে রংপুরগামী যাত্রীবাহী বাসের চালক মোতালেব হোসেন জানান, মহাসড়কের অবস্থা অনেকটা ভালো হওয়ায় এবারের ঈদে যাত্রীরা যানজটের ভোগান্তি ছাড়াই বাড়ি ফিরতে পারছে। ঢাকা থেকে বের হতে কিছুটা ধীর গতি থাকলেও বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে মহাসড়ক ফাঁকা রয়েছে। এতে সব যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলাচল করতে পারছে।

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের সাথে গাড়ির সংখ্যাও বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু এ রুটে এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো গাড়ি থেমে থাকেনি। স্বাভাবিক গতিতেই গাড়ি চলছে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম.এ ওয়াদুদ বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে মহাসড়কে বিভিন্ন ধরনের গাড়ির চাপ কিছুটা বেড়েছে। তবে মহাসড়কের কোথাও কোনও ভোগান্তি নেই। সকল গাড়ি একদম নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। আশা করছি এবছরে যানজটের সৃষ্টি হবে না। আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।

সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মো. জাফর উল্লাহ বলেন, গাড়ির চাপ বাড়তে থাকলেও মহাসড়ক একদম স্বাভাবিক রয়েছে। সোমবার (৮ এপ্রিল) পোশাক কারখানা ছুটি হলে যানবাহনের চাপ বাড়তে পারে। তবে আগামীকাল সোমবার সকাল থেকেই ঝাঐল ওভার ব্রিজ ও হাটিকুমরুল গোলচত্বরে ড্রোন ক্যামেরা উড়ানো হবে। ড্রোন ক্যামেরার ভিডিও সরাসরি সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের ফেসবুক পেইজে লাইভ করা হবে।

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, সাসেক-২ প্রকল্পের আওতায় বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম থেকে বগুড়া পর্যন্ত মহাসড়ক ৪ লেনের উন্নীতকরণের কাজ ৮৫ ভাগ শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে এই পথে বেশ কয়েকটি ওভারপাস ও ব্রিজ খুলে দেয়ায় সব যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলাচল করতে পারছে। ফলে এবার এ পথে ঈদ যাত্রায় কোনো ভোগান্তি হবে না।

যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ৭০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ সমন্বিতভাবে কাজ করছে। এছাড়াও তদারকির জন্য সিনিয়র কর্মকর্তারও মহাসড়কেই অবস্থান করবেন বলে তিনি জানান।